Read more »
একটুখানি পড়ে দেখুন:
লেখকের কথা
বেগম ফয়জুন্ন্সো আমাদের মা। আমাদের সৌভাগ্য যে, আমরা তাঁর মতো এমন একজন মহিয়সী নারীকে মা হিসেবে পেয়েছিলাম। আমরা নয়জন ভাইবোন যার যার আত্মসম্মান নিয়ে নিজ নিজ ক্ষেত্রে সৎ ও সম্মানের সঙ্গে বেঁচে আছি। কিন্তু আমাদের মা ১৪ই জুলাই, ১৯২১ সালে আমাদের ছেড়ে আল্লাহ রব্বুল আলামীনের সান্নিধ্যে চলে গেছেন। আমরা আশা করি, তিনি ওপারে ভালো আছেন।
মা ফয়জুন্নেসা বেগম ঢাকা জেলার তৎকালীন তেজগাঁও থানার উত্তরখান ইউনিয়নের মৈনারটেক সংলগ্ন মাউছাইদ গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ১৯৩৯ সালের ২রা মে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা আব্দুল বাসেত ভূইঁয়া এবং মাতা চান বানু বিবির তিনিই ছিলেন প্রথম সন্তান। শিক্ষানুরাগী মা তার নিজ সন্তান ও তার পরিচিতদের কীভাবে শিক্ষিত করে তোলা যায়, সে ব্যাপারে সব সময়ই চিন্তা করতেন এবং তার মতো করে যথাসাধ্য চেষ্টা করে গেছেন। আমাদের মাকে যারা চেনেন তারা মাকে ‘রত্নাগর্ভা’ বলে মনে করেন।
উত্তরখান ইউনিয়নের মাউছাইদ গ্রাম ও এর আশেপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের লোকজন বাবা-মাকে চিনতেন এবং দরিদ্র অভাবী মানুষ মাকে স্মরণ করতেন তাদের অভাব অনটনের দিনগুলোতে। আমাদের মা তাঁর পরিচিতি-অপরিচিত সবার অভাব পূরণের জন্য সচেষ্টা থাকতেন বিনিময়ে কিছু না চেয়েই। তিনি মনে করতেন, একা একা সুখি হওয়া যায় না, সুখি হতে হলে সবাইকে সঙ্গে নিয়েই হতে হয়।
আমরা মাকে শুধু একজন জন্মদাত্রী জননী হিসেবেই পাইনি, আমরা পেয়েছিলাম একজন মহিয়সী নারীকে, যিনি ছিলেন আমাদের প্রত্যেকের রক্ষাকবচ। আমাদের সুখে-দুখে কষ্টে-আনন্দে আমাদেরকে তিনি লতার মতো জড়িয়ে রাখতেন; আমরা তাকে অবলম্বন করেই বেড়ে উঠেছি, প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হতে পেরে মায়ের মতোই অসহায় ও অনাহারীদের পাশে দাঁড়াতে পারছি। আমাদের মা ও বাবাকে স্মরণ করে আমরা গড়ে তুলেছি বেগম ফয়জুন্নেসা ও মজিবুর রহমান ফাউন্ডেশন।
স্মৃতিচারণমূলক এই বইটি মাকে নিয়ে লিখিত। প্রতিটি ভাইবোন ও আত্মীয়স্বজন এই বইটি প্রকাশ করতে যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন, আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। বইটিতে ভুলত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইল।
ড. শিরীন আক্তার
২০শে জুলাই, ২০২৫
0 Reviews